• সাভার

  •  শুক্রবার, মে ১৭, ২০২৪

নগর জুড়ে

মর্যাদাপূর্ণ মজুরি, কর্মস্থলে নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি শ্রমিকদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

 প্রকাশিত: ০৮:৩১, ২ মে ২০২৪

মর্যাদাপূর্ণ মজুরি, কর্মস্থলে নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি শ্রমিকদের

মর্যাদাপূর্ণ মজুরি, কর্মস্থলে নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি শ্রমিকদের

ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়া ও সাভার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে মহান মে দিবস পালন করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে শোভাযাত্রা, সমাবেশ, আলোচনা সভা ও মিছিল কর্মসূচি পালন করেছে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।

এসব কর্মসূচিতে আট ঘণ্টা কাজে মর্যাদাপূর্ণ মজুরি, কর্মস্থলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, সুচিকিৎসা, মাতৃত্বকালীন ছুটি ছয় মাসে উন্নীত করা, ট্রেড ইউনিয়ন গঠনে হয়রানি বন্ধ করাসহ নানা দাবি জানানো হয়। ‘আমরা চাই, দেখতে সূর্যের আলো, প্রাণভরে নিতে চাই ফুলের গন্ধ’ স্লোগান ধারণ করে আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আশুলিয়ার ফ্যান্টাসি কিংডমের সামনে থেকে মহান মে দিবস উপলক্ষে শোভাযাত্রা বের করে বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি। শোভাযাত্রাটি ফ্যান্টাসি কিংডমের সামনে থেকে শুরু হয়ে আশুলিয়ার বাইপাইল বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে শেষ হয়। এর আগে একই স্থানে সমাবেশ করেন সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা।

সমাবেশে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার, সাংগঠনিক সম্পাদক প্রবীর সাহা, আশুলিয়ার সভাপ্রধান জিয়াদুল ইসলাম, আশুলিয়ার সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন, কেন্দ্রীয় সদস্য সাবিনা আক্তার প্রমুখ বক্তব্য দেন। এ ছাড়া বিকেল চারটার দিকে সাভারের বিরুলিয়া এলাকায় সংগঠনের নেতা-কর্মী ও শ্রমিকদের নিয়ে আলোচনা সভা হয়। সমাবেশে সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার বলেন, মে দিবসের ১৩৮ বছর আজ। সারা দুনিয়ায় আট ঘণ্টার শ্রম স্বীকৃতি পেয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের শ্রমিকেরা কাগজে-কলমে আট ঘণ্টার স্বীকৃতি পেলেও আট ঘণ্টায় যে মজুরি পান, তাতে তাঁদের জীবন চলে না। শ্রমিকেরা বাধ্য হন অতিরিক্ত কাজ করতে।

কখনো কখনো শ্রমিকদের নানা অজুহাতে ফাউ বা বিনা মজুরিতে খাটানো হয়। বর্তমানে শ্রমিকেরা ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ শেষে বাড়িতে এসে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সংকটে হিমশিম খান। এ পরিস্থিতি শ্রমিকদের আট ঘণ্টায় মর্যাদাপূর্ণ মজুরি ও জীবন বাঁচানোর লড়াইয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তিনি বলেন, গত মজুরির আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে আঞ্জুয়ারা, জামাল উদ্দিন, রাসেল ও ইমরান। গ্রেপ্তার করা হয়েছে তিন শতাধিক শ্রমিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতা-কর্মী। নিহত শ্রমিকদের ন্যায়বিচারপ্রাপ্তি ও শ্রমিক এবং শ্রমিক নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।

 দিবসটি উপলক্ষে বেলা ১১টার দিকে আশুলিয়ার বাইপাইল ত্রিমোড় এলাকায় জড়ো হন বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। পরে তাঁরা সেখানে সমাবেশ করেন। সমাবেশ শেষে লাল পতাকা নিয়ে একই স্থান থেকে শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক হয়ে আশুলিয়া প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বস্ত্র ও পোশাকশিল্প শ্রমিক লীগ, গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য লীগ, বাংলাদেশ বিপ্লবী গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন, ইউনাইটেড ফেডারেশন অব গার্মেন্টস ওয়ার্কার্সের নেতা-কর্মীরা।

গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. সরোয়ার হোসেন বলেন, কারখানার উৎপাদন বৃদ্ধিতে শ্রমিকদের সঙ্গে কারখানার মালিকদের সুসম্পর্ক বজায় থাকতে হবে, তাদের মধ্যে একতা থাকতে হবে। এতে সর্বোপরি দেশেরই উন্নয়ন হবে। কারখানায় অবৈধ ছাঁটাই ও ট্রেড ইউনিয়ন গঠনে হয়রানি বন্ধ, শ্রমিকদের জন্য পেনশন স্কিম চালু, গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য রেশনিং সুবিধা চালুসহ আমাদের কিছু দাবি রয়েছে। এসব দাবি পূরণে সংশ্লিষ্টদের উদ্যোগ নিতে হবে। এসব দাবি আদায়ের মধ্য দিয়েই শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে।

দিবসটি উপলক্ষে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে দুর্ঘটনাজনিত বিমা চালু, শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করাসহ কিছু দাবিতে আশুলিয়ায় বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়কের বাইপাইল থেকে ইউনিক বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত শোভাযাত্রা করেছে বাংলাদেশ সেন্টার ফর ওয়ার্কার্স সলিডারিটি (বিসিডব্লিউএস) ও বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের (বিজিআইডব্লিউএফ) নেতা-কর্মীরা। এ ছাড়া বেলা ১১টার দিকে সাভার পৌর শ্রমিক লীগের উদ্যোগেরা সাভার বাসস্ট্যান্ড থেকে রিকশা শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের রেডিও কলোনি বাসস্ট্যান্ড প্রদক্ষিণ করে সাভার বাসস্ট্যান্ডসংলগ্ন রানা প্লাজার সামনে আসে। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে পুনরায় শোভাযাত্রাটি সাভার উপজেলা পরিষদের সামনে গিয়ে শেষ হয়।

মন্তব্য করুন: