• সাভার

  •  শনিবার, জুলাই ২৭, ২০২৪

নগর জুড়ে

বিচারক না থাকায় বাড়ছে মামলাজট

নিজস্ব প্রতিবেদক

 প্রকাশিত: ১৬:৪৪, ১১ মে ২০২৪

বিচারক না থাকায় বাড়ছে মামলাজট

বিচারক না থাকায় বাড়ছে মামলাজট

চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বদলি হওয়ার পর প্রায় ৫০ দিন পার হয়েছে। এখনো নিয়োগ দেওয়া হয়নি নতুন বিচারক। বিচারকশূন্য থাকায় ৬০৪টি মামলার বিচারকাজে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে ৩২৬টি দুর্নীতির মামলাও রয়েছে। এ ছাড়া পাঁচ বছর বা এর বেশি সময় ধরে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ৪২৮। বিচারক না থাকায় বাড়ছে মামলার জট। 

প্রসিকিউশন থেকে শুরু করে মামলার বাদী এমনকি বিবাদীরাও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। আদালত সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মুনসী আবদুল মজিদকে গত ২১ মার্চ কক্সবাজার বদলি করা হয়।

এরপর প্রায় ৫০ দিন পেরিয়ে গেলেও নতুন করে বিচারক নিয়োগ দেওয়া হয়নি। বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতে কক্সবাজার-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির বিরুদ্ধে আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা একটি মামলা বিচারাধীন।

এ ছাড়া চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে যন্ত্রপাতি কেনার নামে ৯ কোটি ১৫ লাখ ৩০ হাজার ৪২৫ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে চট্টগ্রামের সাবেক সিভিল সার্জন ও চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের সাবেক তত্ত্বাবধায়ক ডা. সরফরাজ খান চৌধুরীসহ সাতজনের বিরুদ্ধে দুদকের করা মামলাটির  বিচারকাজও থমকে আছে। 

এ ছাড়া রয়েছে বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ১৫ কোটি টাকা সম্পদের মামলাও। বিচারক না থাকায় এসব মামলার কাজ এগিয়ে নিতে পারছেন না সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এই আদালতের বেঞ্চ সহকারী মোহাম্মদ মুছা  বলেন, আদালতে বর্তমানে ৬০৪টি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে দুর্নীতির মামলা রয়েছে ৩২৬টি। এ ছাড়া মাদক মামলা ২৪৮টি, অস্ত্র মামলা রয়েছে ২৭টি। বিচারক না থাকায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ মামলার কাজ স্থবির রয়েছে।

দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) কাজী ছানোয়ার আহমেদ লাভলু বলেন, ‘বিচারক না থাকায় দুর্নীতির অনেক মামলার কাজ স্থবির হয়ে আছে। এর মধ্যে সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি ও আসলাম চৌধুরীর দুর্নীতির মামলার বিচারকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে আছে। এসব মামলা সাক্ষীর পর্যায়ে আছে, কিন্তু বিচারক না থাকায় সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করতে পারছি না। 

এ ছাড়া ব্যাংকের বিভিন্ন মামলা এ আদালতে বিচারাধীন। বিচারক না থাকায়  প্রসিকিউশন, মামলার বাদী এমনকি আসামিপক্ষও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।’ কাজী ছানোয়ার আহমেদ লাভলু আরো বলেন, ‘বিচারক বদলি হবে, সেটা স্বাভাবিক। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে নতুন বিচারক নিয়োগ দিতে হবে।

বিচারক চলে গেছে প্রায় ৫০ দিন হলেও এখনো নতুন বিচারক নিয়োগ দেওয়া হয়নি। আশা করছি, আগামী সপ্তাহে নতুন বিচারক নিয়োগ দেওয়া হবে। দ্রুত বিচারক নিয়োগ না দিলে মামলার জট বাড়বে।’ সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) চট্টগ্রামের সভাপতি ও সিনিয়র আইনজীবী আখতার কবির চৌধুরী বলেন, ‘প্রায়ই এই আদালতের বিচারকের পদটা খালি থাকে। কারো ষড়যন্ত্র কি না, আমরা জানি না।

এই আদালতে বিচারক থাকাটা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ অনেক গুরুত্বপূর্ণ মামলার বিচারকাজ চলে এই আদালতে। কিছু দুর্নীতিবাজ মামলার আওতায় এসেছে। তাদের বিচারটাও যদি সঠিক সময়ে না হয়, তাহলে দুর্নীতিবাজদের ভয় কমে যাবে। যদি বিচারকই না থাকেন, তাহলে বিষয়টা দুঃখজনক। এমনিতে মামলা বেশি থাকার কারণে অনেক পরে তারিখ পড়ে মামলার। দুর্নীতি প্রতিরোধ করার জন্য এখানে জরুরি ভিত্তিতে বিচারক নিয়োগ দেওয়া দরকার। আর এখানকার বিচারক বদলি  করলে, আরেকজন বিচারককে এখানে দিয়েই বদলি করা দরকার।’

মন্তব্য করুন: